টবে হাসনাহেনা ফুল চাষের পদ্ধতি

রাতের রানী হাসনাহেনা! অসম্ভব সুন্দর গন্ধ বিশিষ্ট এই ফুলের আদি নিবাস ওয়েষ্ট ইন্ডিজে হলেও বর্তমানে এটি ভারত, থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ, মায়ানমার,মালয়েশিয়া সহ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়।

ফুল চাষের জনপ্রিয়তা খুব বেশি। তার পরিপ্রেক্ষিতে আজ আমরা আলোচনা করব টবে হাসনাহেনা ফুল চাষ নিয়ে। সবাই মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং শেয়ার করে দিন অন্য ছাদ বাগান প্রেমী বন্ধুদের কাছে।

হাসনাহেনা ফুলের ওষধি হিসাবেও মানবদেহের পক্ষে কার্যকরী। কথিত আছে ঝাঁকে ঝাঁকে হাসনাহেনা ফুল ফুটলে, তার তীব্র সুমিষ্ট গন্ধে নাকি সাপ আসে। হাসনাহেনা গাছের পাতা থেতো করে দুধের সাথে উষ্ণ করে খেলে আমাশার মতন রোগও দূরে থাকে।

গোটা বছরই মূলত এই ফুলটি ফোটে তবে শীতকালে এটি ফুটতে দেখা যায় না। বর্ষাকালে এই ফুল গাছ ভর্তি করে হয়। বহু দূর থেকে এই ফুলের গন্ধ পাওয়া যায়। গুল্ম জাতীয় এই ফুল গাছ বহু মানুষ বাড়ির টবেও চাষ করেন। সৌখিন মানুষ যারা তাদের কাছে হাসনাহেনা ফুল অত্যন্ত প্রিয়। হাসনাহেনা ফুলের পাপড়ি সাধারণত পাঁচটি হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাদা রঙেরই পাপড়ি হয়। কোথাও কোথাও আবার আবার ঘিয়ে রংয়ের পাপড়ির হাসনাহেনা দেখতে পাওয়া যায়। নলাকার এই ফুলের পাপড়ি সাধারণত ২ সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে থাকে।

বংশবিস্তার পদ্ধতি(Breed):
বীজ থেকে বংশবিস্তার করা সম্ভব। আবার গুটি কলম পদ্ধতিতে বংশবিস্তার করা যায়।

টব (Tub):
হাসনাহেনা ফুল চাষের জন্য ২৫ সেমি উচ্চতার টব হলে ভাল হয়।

আরও পড়ুনঃ হাসনাহেনার ঘ্রাণে কি সত্যিই সাপ ছুটে আসে ?

মাটি তৈরি ও সার প্রয়োগ(Land Preparation & Fertilizer):
ভাল চাষের জন্য ভারী দোঁয়াশ মাটি হলে ভাল হয়। পরিমান মতো দো-আঁশ বা বেলে মাটি, এর সাথে একমুঠো হাঁড়ের গুঁড়ো, কিছুটা সুপার ফসফেট ও দু’মুঠো ছাই মিশিয়ে নিন। এতে টবের মাটি ভাল থাকবে। এর সঙ্গে কিছুটা পরিমান পাতা পচা সার, গোবর, খৈল ও কিছুটা টিএসপি সার মিশিয়ে মাটি তৈরি করলে ভাল হয়।

পরিচর্যা(Caring):
মার্চের মাঝামাঝি বীজ পুঁতলে বর্ষাকালে ফুল পাওয়া যায়। সার হিসেবে চাপান সার বা তরল সার দিতে হবে। হাসনাহেনা গাছে জল দেওয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে গোড়ায় জল না জমে। মাসে দুবার মাটি খুঁচিয়ে দিতে হবে। মাটি যদি কোনো কারণে স্যাঁতস্যাঁতে হয়, তাহলে কলি ঝরে যাবে। খেয়াল রাখতে হবে বর্ষায় যেন মাটিতে টব না রাখা হয়।ঝড়ে গাছের গোড়া নড়ে গেলে গাছ মরে যাওয়ার আশঙ্খা থাকে। তাই ঝড় ও মাটি বাহিত ছত্রাক থেকে গাছকে রক্ষা করতে হয়। গ্রীষ্ম কালে সকাল বিকেল জল দিতে হবে।

ডাল ছাঁটাই(Pruning):
একটি সতেজ গাছ তৈরির প্রক্রিয়াটি হল গাছটি বড় হলে ডালের অনেকটা ছেটে দিতে হবে। অবশ্যই দেখবেন তার সিজনের ফুল দেওয়া শেষ হয়েছে কিনা। এরপর মঞ্জরীও ছেঁটে দিতে পারেন। এরপর কয়েকদিন পর কান্ডের পাশ থেকে শাখা বের হবে, তাদের মধ্যে কয়েকটি শাখা রেখে বাকীগুলি ছিড়ে ফেলুন। শীতকালের শেষে গাছের অর্দ্ধেক উচ্চতা থেকে ছেঁটে ফেলতে হবে। সময়মতো গাছের গোড়ায় মাটি দিন।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *