পোকা চেনার উপায় :এ পোকা দেখতে অত্যন্ত ছোট, সাধারণত হাত লেন্সের সাহায্য ছাড়া দেখা যায় না। এগুলো দলবদ্ধভাবে পাতার নিচে অবস্থান করে। পোকা উপবৃত্তাকার, উজ্জ্বল, হলদে সবুজ বর্ণের আট পা বিশিষ্ট।
ক্ষতির ধরণ :লার্ভা ও মাইট গাছের কোষ ছিদ্র করে রস শোষণ করে এবং বিষাক্ত পদার্থ নিঃসৃত করে। পানি স্বাভাবিক প্রবাহ বিঘ্নিত হয়। মাকড়ের আক্রমণ হলে মরিচ গাছের কচি পাতাগুলো কুঁকড়ে যায়, গাছ নিস্তেজ হয়ে পরে। পাতা ফ্যাঁকাসে, মোচড়ানো এবং আক্রমন বেশি দিনের হলে পাতা কুঁকড়ে নিচের দিকে নৌকার মত বাঁকানো হয়।মরিচের গায়ে বাদামী দাগ পরে। আক্রান্ত অবস্থায় পাতার শিরার মধ্যকার এলাকা বাদামি রঙ ধারণ করে ও শুকিয়ে যায় এবং গাছ মারা যায়।গাছে ফুল থাকলে ঝরে পরে, মরিচ ঝরে যায় ও খাওয়ার অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে।
ব্যবস্থাপনা :
প্রাথমিক অবস্থায় ১% ইউরিয়া মিশানো পানি ( ০১ লিটার পানিতে ১০ গ্রাম ইউরিয়া)স্প্রে করে এ মাইট দমন করা যায়। ১ম বার স্প্রে করার ০৭ দিন পর ২য় বার স্প্রে করতে হবে।
সালফার জাতীয়(কুমুলাস ডিএফ বা রনোভিট ৮০ ডব্লিউজি বা থিওভিট ৮০ ডব্লিউজি বা সালফোলাক ৮০ ডব্লিউজি, ম্যাকসালফার ৮০ ডব্লিউজি বা সালফেটক্স ৮০ ডব্লিউজি)প্রতি ১ লিটার পানিতে ২.৫ গ্রাম মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। অথবা প্রোপারগাইট (সুমাইট ৫.৭ ইসি) বা ব্রোমাপ্রোফাইলেট (নিউরোন ৫০০ ইসি) বা ডাইকোফল (ডাইকোফল ১৮.৫ ইসি) বা ইথিওন (ইথিওন ৪৬.৫ ইসি বা সিথিওন ৪৬.৫ ইসি) প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি. হিসেবে।
আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে মাকড়নাশক ওমাইট ৫৭ ইসি (প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২.০ মিলি হারে) বা ভার্টিমেক ১৮ ইসি প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১৫ মিলি হারে পাতা ভিজিয়ে স্প্রে করে মাকড়ের আক্রমণ প্রতিহত করা সম্ভব।
মাইটগুলো সাধারণত পাতার নিচের দিকে থাকে, এ জন্য স্প্রে করার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যেন পাতার নিচের অংশ সম্পূর্ণভাবে ভিজে যায়।
ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
অন্যান্য :
আধা ভাঙ্গা নিম বীজের ( ৫০ গ্রাম এক লিটার পানিতে ২৪ ঘণ্টা ভেজানোর পর মিশ্রণটি ছাঁকতে হবে ) রস আক্রান্ত গাছে ১০ দিন পর পর ৩ বার স্প্রে করতে হবে।
সাবধানতাঃ
একই জমিতে বার বার মরিচ করবেন না ।
করনীয়ঃ
১. মরিচ উৎপাদনের জন্য ছায়ামুক্ত স্থান নির্বাচন করতে হবে। ২. সুষম সার ব্যবহার করা।